২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত গাজায় ৬৪ হাজার ২৬০ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছেন গবেষকরা।গাজায় মানুষ মরেছে ‘হিসাবের চেয়ে’ ২৬ হাজার বেশি: ল্যানসেট গবেষণাগাজায় ইসরায়েলের হামলায় মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা ফিলিস্তিনের স্থানীয় প্রশাসনের নথিভুক্ত সংখ্যার চেয়ে অন্তত ২৬ হাজার বেশি বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।ল্যানসেট সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে সিএনএন লিখেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় প্রায় ৬৪ হাজার ২৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে ‘আঘাতজনিত’ কারণে।অন্যদিকে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ওই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৭ হাজার ৮৭৭ জনের, যা গবেষণায় উঠে আসা সংখ্যার চেয়ে প্রায় ৪১ শতাংশ কম।
গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাজ্যের ‘লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের’ (এলএসএইচটিএম) কয়েকজন গবেষক।তারা বলছেন, ২০২৪ সালের অক্টোবর নাগাদ মৃত্যুর সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
যুদ্ধের মধ্যে গাজায় চিকিৎসা, খাবার পানি ও খাদ্যের অভাব এবং ছড়িয়ে পড়া নানা অসুখেও বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এসব মৃত্যুর হিসাব এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।গবেষকরা বলছেন, গাজা উপত্যকার প্রায় ৩ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে সহিংসতায়। এদের মধ্যে ৫৯ শতাংশই নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি।এলএসএইচটিএম মনে করে, হতাহতের সংখ্যার এই তারতম্যের বিষয়টি মূলত গাজার স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো ভেঙে পড়ার কারণেই ঘটেছে। স্বাস্থ্য অবকাঠামো ভেঙে পড়ার কারণে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ হতাহতের হিসাব ঠিকঠাক রাখতে পারছে না।গবেষকরা বলছেন, হতাহতের সংখ্যা বের করতে তারা প্রথমে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা হাসপাতালগুলোর মর্গের তথ্য, অনলাইন জরিপ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা সহিংসতার তথ্য সমন্বয় করেছেন।
এরপর ‘ক্যাপচার-রিক্যাপচার অ্যানালাইসিস’ পদ্ধতিতে হতাহতের সংখ্যা বের করেছেন তারা। যখন ঘটনাসংশ্লিষ্ট সব নথি পাওয়া যায় না, তখন সাধারণত এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন গবেষকরা।এই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন জেইনা জামালউদ্দিন। তিনি বলেন, “গবেষণা প্রতিবেদন এটাই বলছে যে গাজায় বেসামরিক মানুষের মৃত্যু বন্ধে জরুরিভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”গত মাসে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) পক্ষ থেকে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনিদের খাবার পানি থেকে বঞ্চিত করছে। এতে করে সেখানে বিভিন্ন রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে এবং হাজারো মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। .এইচআরডব্লিউ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, বিশুদ্ধ পানির অভাবে সেখানে মানুষের মৃত্যুর প্রকৃত হিসাব কখনোই হয়ত জানা সম্ভব হবে না। কারণ এই হিসাব বের করার মত অবকাঠামো গাজায় অবশিষ্ট নেই।এরই মধ্যে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ তুলেছে এইচআরডব্লিউ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও (আইসিজে)।